আবরারের ফাহাদের জানাজায় মানুষের ঢল


পিটিয়ে হত্যা করা বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদের জানাজায় হাজার হাজার মানুষ অংশগ্রহণ করেন। কুষ্টিয়ায় দুই দফা জানাজা শেষে আবরারকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়। তার মৃত্যুতে এলাকায় নেমে এসেছে শোকের ছায়া। এমন মৃত্যু মেনে নিতে পারছেন না কেউ। স্বজন ও এলাকাবাসী এ হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি জানিয়েছেন।
প্রিয় সন্তান এসেছে বাড়িতে। তবে জীবিত নয় মৃত। তাই বাড়িজুড়ে কান্নার রোল। বাবার বুকচাপা কান্না আর মায়ের আহাজারিতে সান্ত্বনা দেয়ার কোনো ভাষা নেই। ছেলেকে হারিয়ে পাগলের দশা মা রোকেয়া খাতুনের।
ছেলের অকাল মৃত্যুতে আহাজারি করতে করতে আবরারের মা বলেন, এমন ছেলে লাখে একটাও হয় না রে...। সবার ঘরে বেটা থাকতে পারে, আমার বেটার মতো বেটা ছিল না। আমার বেটা কোনো দিনও জোরে কারো সঙ্গে কথা বলে নাই। কোনো রাজনীতির মিছিলে যায় নাই। যেইখানে রাজনীতির আলাপ করে সেইখানেও যায় নাই। আমার বেটা শুধু লেখাপড়া নিয়াই থাকতো।
ছেলের স্মৃতি আওড়াতে আওড়াতে মূর্ছা যাচ্ছেন রোকেয়া খাতুন।
আবরার চারটি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা দিয়ে চারটিতেই সুযোগ পান। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং-এ মেধা তালিকায় ১৩ নম্বরে ছিলেন। সরকারের কাছে ছেলে হত্যার সুষ্ঠু বিচার ও জড়িতদের যথাযথ শাস্তির আর্জি জানান এ মা।
মঙ্গলবার ভোরে (৮ অক্টোবর) ঢাকা থেকে বুয়েট শিক্ষার্থী আবরারকে বহনকারী অ্যাম্বুলেন্সটি কুষ্টিয়া শহরের পিটিআই রোডের বাসার সামনে পৌঁছায়। এ সময় কান্নায় ভেঙে পড়েন তার বাবা-মাসহ আত্মীয় স্বজনরা।
আবরারকে শেষ বারের মতো দেখতে ভিড় করেন এলাকাবাসীও। পরে দ্বিতীয় জানাজা শেষে দাফনের জন্য মরদেহ নেয়া হয় গ্রামের বাড়ি কুমারখালীতে। সেখানে তৃতীয় দফা জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এতে এলাকার নানা শ্রেণিপেশার মানুষ অংশ নেন। এ সময় হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান তারা।
এদিকে সকাল থেকে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) ছাত্র আবরার ফাহাদ হত্যাকাণ্ডের বিচার দাবিতে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ চলছে। এরইমধ্যে তারা কয়েক দফা দাবি তুলে ধরেছেন।
বুয়েট শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ হত্যার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন করেছেন দেশের বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়সহ স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা। দেশে আইনের শাসন নেই অভিযোগ করে আবরার হত্যার দ্রুত বিচার দাবি জানান তারা।