২০১৮-১৯ অর্থবছরে

বেনাপোল বন্দর দিয়ে ১৮ লাখ মেট্রিক টন পন্য আমদানি

মোঃ সাগর হোসেন
প্রকাশিত: ০৩:৪৫ পিএম, শনিবার, ৭ সেপ্টেম্বর ২০১৯ | ২৪১

২০১৮-১৯ অর্থবছরে বেনাপোল স্থল বন্দর দিয়ে ভারত থেকে ১৮ লাখ ৩৬ হাজার ৯৫৩ মেট্রিক টন পন্য আমদনি হয়েছে। এসব পন্য ভারতীয় এক লাখ ২২ হাজার ৩৩৫ টি ট্রাকে আমদানি হয়েছে বলে জানা যায়। একই সময়ে বন্দর থেকে পণ্য খালাস হয়েছে ১৯ লাখ ৯০ হাজার ২৭৮ মেট্রিক টন। এসব পণ্য এক লাখ ৭৩ হাজার ৯৬৪টি ট্রাকে খালাস করা হয়। তবে বন্দরের অবকাঠামোগত উন্নয়ন হলে এ বন্দর দিয়ে আমদানি আরো বাড়বে বলে মনে করেন ব্যবসায়ীরা।

এদিকে ২০১৮-১৯ অর্থবছরে বেনাপোল বন্দর থেকে রাজস্ব আদায় হয়েছে লক্ষমাত্রার চেয়ে এক হাজার ৪০৩ কোটি টাকা কম। বেনাপোল বন্দরে চার হাজার ৪০ কোটি টাকা  ১৮-১৯ অর্থবছরে আদায় হয়েছে। টার্গেট ছিল ৬ হাজার ২৮ কোটি  ৩৪ কোটি ৩৫ লাখ টাকা। ২০১৭-১৮ অর্থবছরে ১৯ লাখ ৮৮ হাজার ৩৫৭ মেট্রিক টন পণ্য আমদানির বিপরীতে রাজস্ব আয় হয় চার হাজার ১৬ কোটি ২৪ লাখ টাকা। ওই অর্থবছরেও রাজস্ব আদায় লক্ষ্য মাত্রার চেয়ে ১৭৯ কোটি ৬৪ লাখ টাকা কম হয়।



সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, দেশে অনুমোদিত স্থলবন্দর আছে ২৩টি। এগুলোর মধ্যে সচল রয়েছে ১১টি স্থলবন্দর। এর মধ্যে ছয়টি সরকারি ব্যবস্থাপনায় আমদানি-রফতানি কার্যক্রম পরিচালনা করছে। বাকি পাঁচটি চলছে বেসরকারি ব্যবস্থাপনায়। অন্যান্য ১২টি স্থলবন্দর দিয়ে এখনও পর্যন্ত বাণিজ্যিক কার্যক্রম শুরু হয়নি। সচল ১১টি বন্দরের মধ্যে সবচেয়ে বেশি রাজস্ব আদায় হয় বেনাপোল থেকে।

স্থলপথে বাংলাদেশের সঙ্গে ভারত, মিয়ানমার ও নেপালের বাণিজ্যিক কার্যক্রম সচল রয়েছে। বাইরের দেশ থেকে আমদানি হওয়া পণ্যের মধ্যে উল্লেখ যোগ্য হচ্ছে- শিল্প কারখানায় ব্যবহৃত কাঁচামাল ও যন্ত্রপাতি। আর রফতানি পণ্যের মধ্যে রয়েছে কাঁচা পাট ও পাটের তৈরি পণ্য।

ভারত-বাংলাদেশ ল্যান্ডপোর্ট ইমপোর্ট-এক্সপোর্ট সাব কমিটির চেয়ারম্যান মতিয়ার রহমান বলেন, ‘যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজ হওয়ায় ব্যবসায়ীরা এ পথে ব্যবসা করতে আগ্রহী হচ্ছেন। বাণিজ্য সম্প্রসারণের কথা বিবেচনা করে সরকার এরই মধ্যে চার দেশের মধ্যে (ভুটান, বাংলাদেশ, ইন্ডিয়া ও নেপাল)  ট্রানজিট চুক্তি করেছে। এক্ষেত্রে উভয় দেশের ব্যবসায়ীরা লাভবান হবেন। কিন্তু অবকাঠামো গড়ে না ওঠায় ব্যবসায়ীরা মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন। এ পথে বাণিজ্য প্রসার করতে হলে অবকাঠামোগত উন্নয়নের কোনো বিকল্প নেই।’

বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মফিজুর রহমান সজন বলেন, ‘যদিও বন্দর কর্তৃপক্ষ অবকাঠামো উন্নয়ন করছে, তবে সেটা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল। এটা নিয়ে ভারতীয় ব্যবসায়ীদেরও অভিযোগ আছে। প্রয়োজনীয় অবকাঠামো নির্মাণ হলে এখান থেকে রাজস্ব আদায় দ্বিগুণ হবে।’

বেনাপোল স্থলবন্দর আমদানি-রফতানি সমিতির সিনিয়র সহ-সভাপতি আমিনুল হক জানান, দেশের স্থলপথে যত পণ্য আমদানি-রফতানি হয়, তার ৬০ শতাংশ হয় বেনাপোল বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে। তবে প্রয়োজনীয় অবকাঠামো না থাকায় অনেকে আগ্রহ হারাচ্ছেন।

বেনাপাল স্থলবন্দরের উপ-পরিচালক (প্রশাসন) আব্দুল জলিল বলেন, ‘বন্দরের অবকাঠামো উন্নয়নে বিভিন্ন প্রকল্প গ্রহন করা হয়েছে। কিছু কাজও শুরু হয়েছে। অটোমেশন প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। এছাড়া নতুন কিছু জায়গা অধিগ্রহন, সিসি ক্যামেরা স্থাপনের পরিকল্পনা আছে। আশা করছি, দ্রুত এসব উদ্যোগ বাস্তবায়ন  হবে।