ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ

ভূঞাপুরে ভালো রাস্তা সংস্কারে পৌনে এক কোটি টাকা বরাদ্ধ !

মামুন সরকার, ভূঞাপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ০৩:২১ এএম, বুধবার, ১০ জুলাই ২০১৯ | ৫৭৯

টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর উপজেলার নিকরাইল ইউনিয়নের সিরাজকান্দী বাজার থেকে নিকরাইল বাজার পর্যন্ত ভালো রাস্তা সংস্কারের জন্য দেয়া হয়েছে অতিরিক্ত অর্থ বরাদ্ধ। আর সংস্কারের নামে রাস্তাটির কাজে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ করেছেন স্থানীয়রা। তাদের অভিযোগ কর্তৃপক্ষের যোগসাজশে ভালো সড়কে সংস্কার কাজের নামে হাতিয়ে নেয়া হচ্ছে লাখ লাখ টাকা।

জানা যায়, ২০১৮-১৯ অর্থ সালের গ্রাম সড়ক পূনর্বাসন প্রকল্পের আওতায় সিরাজকান্দী বাজার থেকে নিকরাইল বাজার পর্যন্ত সড়কটির প্রস্তাব পেশ করে ভূঞাপুর স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর। পরে ১৯৭৫ মিটার (প্রায় দুই কিলোমিটার) সড়ক সংস্কারের জন্য বরাদ্ধ দেয়া হয়েছে ৭১ লাখ ৭২ হাজার ২৯৫ টাকা।

কাজটি পায় রোহান এন্টারপ্রাইজ নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। প্রাক্কলনে সড়কের দু’পাশে মাটি ভরাট, পুরাতন সড়কের বেডে পাঁচ ইঞ্চি পুরুত্বের প্রথম শ্রেণির নতুন খোয়া ও বালু দিয়ে ভরাট, দু’পাশে এজিং স্থাপন, ক্ষতিগ্রস্থ অংশে সাব-বেইজ, আরসিসি প্যালাসাইটিং, ২৫ মিলিমিটার ডেন্স কার্পেটিংসহ আনুসাঙ্গিক কয়েকটি বিষয়ের জন্য বরাদ্ধ দেয়া হয় এ অর্থ। তবে এসব অধিকাংশ কাজেই নিময়-নীতি অনুসরণ করা হয়নি। প্রশ্ন উঠেছে স্বল্প দুরত্বের সড়ক সংস্কারে বিপুল অঙ্কের বরাদ্ধ নিয়ে।

স্থানীয় ফজলু মিয়া, হাসান আলী, নুরুল হক ও ছাত্তার জানান, রাস্তার পুরাতন বেডের পিচ অপসারণ না করে পুরাতন বেডের উপরই করা হচ্ছে পিচ ঢালাই। সড়কের দু’পাশে মাটি ভরাট করার কথা থাকলেও তা না করে কিছু জায়গায় বাঁশ ও টিন দিয়ে বেড়া দেয়া হয়েছে। সাব-বেইজে নতুন মালামাল ধরা হলেও তা ব্যবহার করা হয়নি। ৮০ শতাংশ অংশে ৫ ইঞ্চি পুরুত্বের খোয়া বালু দিয়ে ভর্তি করার কথা থাকলেও তা মানা হয়নি। তারা যেভাবে কাজ করছে তাতে মনে হয় এই কাজে সর্বোচ্চ ব্যয় হবে ১৫-২০ লাখ টাকা। এরকম কাজ করার থেকে না করাই ভালো ছিলো। আগের রাস্তাটিই এর থেকে অনেক ভালো ছিলো। তাই সড়ক নির্মাণ ও সংস্কার কাজের অনিয়ম বন্ধে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের যথাযথ নজরদারী কামনা করেছেন তারা।

এসব অনিয়মের বিষয়ে ঠিকাদারি কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলতে চাইলে তারা কথা বলতে রাজী হয়নি।

এবিষয়ে ভূঞাপুর এলজিইডির সহকারি প্রকৌশলী সানোয়ার হোসেন জানান, রাস্তাটি অনেক ভাঙা ছিলো। তাই টেন্ডার করানো হয়েছে। এই রাস্তায় সংস্কার কাজে কোন অনিয়ম হয়নি। প্রাক্কলণ অনুযায়ী যথাযথ ভাবেই কাজ বুঝে নেয়া হচ্ছে।

ভূঞাপুর এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী আলী আকবর খাঁন জানান, আমার অফিসের লোক দিয়ে সবসময় দেখাশোনা করানো হচ্ছে। ডিজাইন মোতাবেক কাজ হয়েছে। এখানে কোন অনিয়ম করার সুযোগ নেই এবং এই কাজে যে ব্যায় ধরা হয়েছে তা যৌক্তিক । এর থেকে কম টাকা হলে রাস্তার কাজের মান ভালো হতোনা বলে জানান তিনি ।