জাতীয় চার নেতাকে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ


আজ ৩ নভেম্বর, জেলহত্যা দিবস। ঐতিহাসিক এ দিনটিতে জাতি জাতীয় চার নেতাকে হারিয়েছেন। তাই বাংলাদেশের ইতিহাসের অন্যতম বর্বরোচিত এই কালো অধ্যায় এ দিনটি। জাতি আজ যথাযথ মর্যাদায় ও বিনম্র শ্রদ্ধা নিবেদনের মাধ্যমে জাতীয় চার নেতাকে স্মরণ করছে স্মরণ করছে।
রাষ্ট্রীয়ভাবে এবং ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন দল ও সংগঠনের উদ্যোগে সারা দেশে পালিত হচ্ছে জেলহত্যা দিবস।
জেলহত্যা দিবস উপলক্ষে নানা কর্মসূচি পালন করছে আওয়ামী লীগ। শুক্রবার (০৩ নভেম্বর) সকাল ৬টায় বঙ্গবন্ধু ভবন ও দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়সহ দেশের সর্বত্র শাখা কার্যালয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা অর্ধনমিতরাখা, কালো ব্যাজ ধারণ ও কালো পতাকা উত্তোলন করা হয়। এ ছাড়া সকাল ৭টায় রাজধানীর ধানমণ্ডি ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করে আওয়ামী লীগ।
অন্যদিকে, দিবসটি উপলক্ষে সকালে বনানী কবরস্থানে জাতীয় নেতাদের কবরে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ, ফাতেহা পাঠ, মিলাদ মাহফিল ও মোনাজাতের আয়োজন করা হয়।
একইভাবে রাজশাহীতে জাতীয় নেতা শহীদ কামারুজ্জামানের কবরে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ, ফাতেহা পাঠ, মিলাদ মাহফিল ও মোনাজাত অনুষ্ঠিত হবে। এ দিন (০৩ নভেম্বর) বিকেল ৩টায় কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে স্মরণসভা অনুষ্ঠিত হবে। এতে সভাপতিত্ব করবেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।
মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম বীর সেনানী ও জাতীয় চার নেতা—সৈয়দ নজরুল ইসলাম, তাজউদ্দীন আহমদ, এ এইচ এম কামারুজ্জামান ও ক্যাপ্টেন এম মনসুর আলীকে ১৯৭৫ সালের এই দিনে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের অভ্যন্তরে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। এর আগে এই জাতীয় চার নেতাকে কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়।
এ নির্মম ও বর্বরোচিত ঘটনার পরের দিন তৎকালীন উপ-কারামহাপরিদর্শক (ডিআইজি প্রিজন) কাজী আবদুল আউয়াল লালবাগ থানায় একটি হত্যা মামলা করেন।
বঙ্গবন্ধুর মন্ত্রিসভার সবচেয়ে ঘৃণিত বিশ্বাসঘাতক সদস্য হিসেবে পরিচিত এবং তৎকালীন স্বঘোষিত রাষ্ট্রপতি খন্দকার মোশতাক আহমেদের প্ররোচণায় একশ্রেণীরর উচ্চাভিলাষী মধ্যম সারির জুনিয়র সেনা কর্মকর্তা এ নির্মম হত্যাকাণ্ড ঘটায়।
দেশের এই চার শ্রেষ্ঠ সন্তানকে ১৫ আগস্টের হত্যাকাণ্ডের পর কারাগারে পাঠিয়ে ষড়যন্ত্রকারীরা প্রথমে গুলি এবং পরে বেয়নেট দিয়ে খুঁচিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত করে।
মুক্তিযুদ্ধকালে মুজিবনগর সরকারের গুরুত্বপূর্ণ পদগুলোতে থেকে জাতীয় চার নেতা ঐতিহাসিক দায়িত্ব পালন করেছিলেন। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অনুপস্থিতিতে অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি ছিলেন সৈয়দ নজরুল ইসলাম। ওই সরকারের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন তাজউদ্দিন আহমেদ, অর্থমন্ত্রী ক্যাপ্টেন এম মনসুর আলী, খাদ্য ও ত্রাণ মন্ত্রী এ এইচ এম কামারুজ্জামান।
শুধু মুক্তিযুদ্ধ নয়, সকল আন্দোলন-সংগ্রামে এই চার নেতা বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ট সহযোদ্ধা হিসেবে বঙ্গবন্ধুর পাশে থেকেছেন। বিভিন্ন সময় বঙ্গবন্ধুকে যখন কারাগারে বন্দি রাখা হয়েছে, এই চার নেতাই তখন আওয়ামী লীগকে নেতৃত্ব দিয়ে আন্দোলন-সংগ্রামকে এগিয়ে নিয়েছেন।