আজ বীরগঞ্জ হানাদার মুক্ত দিবস

দিনাজপুর প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ১১:০০ এএম, বৃহস্পতিবার, ৬ ডিসেম্বর ২০১৮ | ৪৯৮
১৯৭১সালের ৬ই ডিসেম্বর বীরগঞ্জ পাকিস্তানি হানাদার মুক্ত দিবস। এই দিনে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াই করে বীরগঞ্জ এলাকাকে শক্রমুক্ত করে মুক্তি বাহিনী এবং মিত্র বাহিনীর যোদ্ধারা।
 
পার্শ্ববর্তী জেলা ঠাকুরগাঁও জেলা ৩ডিসেম্বর শক্র মুক্ত হওয়ার পর পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী সৈয়দপুর (পাক বিহার) অভিমুখে পালিয়ে যাবার সময় মুক্তি বাহিনী ও মিত্র বাহিনীর প্রবল প্রতিরোধের মুখে পড়ে। হানাদার বাহিনী বীরগঞ্জ থেকে পিছু হটে বীরগঞ্জ-কাহারোল উপজেলা সীমান্তে দিনাজপুর-পঞ্চগড় মহাসড়কে ভাতগাঁও ব্রীজের পুর্ব প্রান্তে অবস্থান নেয়। এখানে পাকবাহিনী ও রাজাকারদের সাথে মুক্তিবাহিনীর তুমুল যুদ্ধে ভাতগাঁও ব্রীজের একাংশ ভেঙ্গে যায়। যুদ্ধে বেশ কিছু মুক্তি বাহিনী ও মিত্র বাহিনীর বীর যোদ্ধা শহীদ হন।
 
৫ ডিসেম্বর বিকেল ৪টায় মিত্র বাহিনীর বিমান হামলার মধ্যে দিয়ে বীরগঞ্জ শক্র মুক্ত হতে থাকে। রাতেই পুরো এলাকা মুক্তিবাহিনী ও মিত্রবাহিনী পুরোপুরি দখল করে নেয়। সকালে বীরগঞ্জের অলিগলির মুক্ত বাতাসে উড়ে স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা।
 
স্বাধীনতা যুদ্ধে দিনাজপুর ৬ নম্বর সেক্টরের অধীন হওয়ায় বীরগঞ্জ উপজেলা এর আওয়াতধীন ছিল। লে. কর্ণেল কাজী নুরুজ্জামান এর নেতৃতাধীন সেনাবাহিনীর হাবিদার মোস্তাফিজুর রহমান বীরগঞ্জ ও খানসামার যুদ্ধ পরিচালনার দায়িত্বে নিয়েজিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, ১৯৭১ সালে যুদ্ধ শুরুর প্রাক্কালে ১৪এপ্রিল ন্যাশনাশ ব্যাংক অব পাকিস্তান বীরগঞ্জ শাখার গার্ড লক্ষীপুর জেলার লক্ষীপুর থানার দিঘলী গ্রামের মৃত. সিকান্দার আলীর পুত্র মোঃ মহসিন আলী এবং বীরগঞ্জ উপজেলার সুজালপুর ইউনিয়নের শীতলাই গ্রামের মোঃ আব্দুর রাজ্জাক মদনপুর সন্মুখ যুদ্ধে শহীদ হন।
 
স্বাধীনতা যুদ্ধে দেশের বিভিন্ন রণাঙ্গনে বীরগঞ্জের বীর সন্তান বুধারু বর্মন, রমেন সেন ও মতিলাল বর্মনসহ ৩জন শহীদ হন।
২০০৮সাল থেকে বীরগঞ্জ মুক্ত দিবস আনুষ্ঠানিক ভাবে পালন করা হয় ।
 
স্থানীয় সাংবাদিক মোঃ আব্দুর রাজ্জাক ও প্রদীপ রায় এ বিষয়টি পত্রিকায় তুলে ধরেন এবং উপজেলা প্রশাসন আয়োজিত বিজয় দিবস উদযাপন প্রস্তুতি সভায় দিনটিকে আনুষ্ঠানিক ভাবে পালনের দাবি জানান। তার দাবির প্রেক্ষিতে তৎকালীন উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ হাসান মারুফ আনুষ্ঠানিক ভাবে দিবসটি পালনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন।
 
সেই সভায় সর্ব সন্মতি ক্রমে বীরগঞ্জ পাবলিক লাইব্রেরীকে দিবসটি পালনের সার্বিক দায়িত্ব দেওয়া হয়। ২০০৮সালে বীরগঞ্জ পাবলিক লাইব্রেরীর বর্ণিল আয়োজনের মধ্যদিয়ে স্বাধীনতার পর প্রথম বারের মত আনুষ্ঠানিক ভাবে পালন করা হয় বীরগঞ্জ মুক্ত দিবস।
 
এ বছর হানাদার মুক্ত দিবস পালনের কোন আয়োজন সম্পর্কে এখন পর্যন্ত কোন তথ্য পাওয়া যায়নি।