চকরিয়ায় আশ্রয়কেন্দ্রের কেল্লার মাটি লুটের অভিযোগ


কক্সবাজারের চকরিয়ার বদরখালীর ঠুটিয়াখালীপাড়া আশ্রয়কেন্দ্রের কেল্লার মাটি লুট হয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। পাশের কয়েকটি পরিবার তাদের বসতভিটা ভরাটের জন্য এ মাটি লুটপাট করে নিয়ে যাচ্ছে। রেড়ক্রিসেন্ট কেল্লাটি ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষার জন্য ঘেরাও করে ঘাস ও গাছ লাগানোর উদ্যোগ নিলে তাদেরকেও বাধা দেয়া হচ্ছে।
জানা যায়, ২০১৬ সালে বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি কেল্লাটি ভার্চু স্কুল অ্যান্ড কলেজকে ব্যবহারের অনুমোদন দেয়। সম্প্রতি রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি ও স্কুল কর্তৃপক্ষ বিধি মোতাবেক নির্ধারিত সীমানা পিলার ধরে কেল্লা ও কেল্লার দীঘি ঘেরাও করে মাটির ক্ষয়রোধে ঘাস ও গাছ লাগানোর উদ্যোগ নিলে তাতে বাধা দেয়া হয়েছে। এতে দূর্যোগে জীবন রক্ষাকারী আশ্রয়কেন্দ্র ও কেল্লাটি কয়েকটি পরিবারের দীর্ঘ দিনের ধ্বংসযজ্ঞের হাত থেকে রেহাই পাচ্ছে না বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির চকরিয়া উপজেলা সিইপি ইনচার্জ মুহাম্মদ আলমগীর বলেন, আশ্রয়কেন্দ্র ও কেল্লা গুরুত্বপূর্ণ জনসম্পদ। তা রক্ষার দায়িত্ব সবার। কিন্তু বদরখালীর খালকাচা ও ঠুটিয়াখালীপাড়ার স্থানীয় কয়েকটি স্বার্থান্বেষী পরিবার ইচ্ছেমত লুটপাট, ক্ষুদ্র ব্যক্তিস্বার্থে ব্যবহারের জন্য রক্ষণাবেক্ষণকে বেআইনীভাবে বাধাগ্রস্ত করতে মরিয়া। এতে আশ্রয়কেন্দ্রটি ধ্বংস হচ্ছে। রক্ষণাবেক্ষণের জন্য প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত ৩০ লক্ষ চারা রোপন কর্মসূচিতে গাছ ও ঘাস লাগানোর জন্য ঘেরাওয়ের উদ্যোগ নেয়া হলে সম্পূর্ণ বেআইনীভাবে কিছু লোক বাধাগ্রস্ত ও উশৃঙ্খল আচরণ করেছে। তারা জনসম্পদটি রক্ষায় দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও স্কুল সংশ্লিষ্টদের আঘাতসহ প্রাণনাশ, সম্মানহানি ও মামলার হুমকি দিচ্ছে। বিষয়টি রেড ক্রিসেন্ট সদর দপ্তর ও প্রশাসনকে জানানো হয়েছে।
এলাকাবাসী জানান, ১৯৯১ সালের প্রলংয়করী ঘূর্ণিঝড়ে ব্যাপক প্রাণহানির পর ১৯৯৬ সালে সাহায্য সংস্থা ইফাদ কেল্লাসহ আশ্রয়কেন্দ্রটি নির্মাণ করে। কিন্তু দু’বছর আগেও তা রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে অসামাজিক কাজের আখড়া ছিল। কিছু স্বার্থান্বেষী স্থানীয় লোক রাস্তা ও ভবনের ইট, সব মূল্যবান ফার্নিচার, সৌর প্যানেল, ব্যাটারি, এমনটি ওয়ারিংয়ের তার পর্যন্ত চুরি করে নিয়েছে। প্রতিবছরই পাশের বাড়িগুলো সেখান থেকে মাটি কেটে নিয়ে নিজেদের বসতভিটা ভরাট করছে। কেল্লার উপর ও পাশে মাটি ছাটাই করে ধানমাড়াই করে। কেল্লার জমি অবৈধ দখল করছে।
গরু-ছাগল লালন-পালন, গোবর শুকাতে দেয়া, জাল বুনা ইত্যাদি তুচ্ছ কাজে যারা কেল্লাটির ক্ষতি করছে তাদের কয়েকজন হলেন, সংলগ্ন খালকাঁচা ও ঠুটিয়াখালীপাড়ার বাসিন্দা জয়তুন্নাহার মানু, আশরাফ আলী, তার ছেলে মো. ইউসুফ, নূরুন্নবী, তার পুত্র জাহাঙ্গীর ও তার স্ত্রী জিয়াসমিন, আলমগীর ও তার স্ত্রী মিনা আক্তার, ছৈয়দ নূর ও তার স্ত্রী হাসিনা বেগম, ছৈয়দ নূর (২), মোজাফফর, গুনু মিয়া, রফিক মাঝি, শহর আলী, ওয়াজ উদ্দীনসহ স্থানীয় অর্ধশাধিক নারী-পুরুষ। এ ব্যাপারে অভিযুক্ত আশরফ আলী বলেছেন আমাদের বসত ভিটা ভরাটের জন্য মাটির প্রয়োজন হয়েছে তাই নিয়ে যাচ্ছি।
এ অবস্থায় তা রক্ষণাবেক্ষণের জন্য বিধিমালা অনুযায়ী বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি ২০১৬ সালে স্থানীয় শিক্ষানুরাগীদেরকে বরাদ্ধ দেয়া হলে ২০১৭ সালে ভার্চু স্কুল অ্যান্ড কলেজ স্থাপন করে। চলতি বছর প্রতিষ্ঠানটি সরকারী অনুমোদন পেলেও আশ্রয়কেন্দ্রটিতে অসামাজিক কার্যকলাপ বন্ধ হয়ে যাওয়া ও লুট বাধা দেওয়ায় তারা প্রতিষ্ঠানটির উদ্যোক্তা, শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের বিরুদ্ধেও মারাত্মক ষড়যন্ত্রে নেমেছে বলে জানা গেছে।