গোপালপুরে ধানের চেয়ে খড়ের দাম বেশি

গোপালপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ০৯:৩৬ পিএম, রোববার, ২ নভেম্বর ২০২৫ | ৭২
টাঙ্গাইলের গোপালপুরে ধান কাটার মৌসুমে কৃষকদের মুখে হাসির চেয়ে চিন্তার ভাঁজই বেশি। মাঠে সোনালি ধান পেকে গেলেও বাজারে দেখা দিচ্ছে এক অদ্ভুত চিত্র ধানের চেয়ে গরুর খাদ্য খড়ের দামই বেশি।
 
দেশের গবাদি পশুর প্রধান খাদ্য হিসেবে ব্যবহৃত খড়ের চাহিদা বর্তমানে অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে গেছে। কৃষি জমি দিন দিন কমে যাওয়া, বোরো মৌসুমে অনিয়মিত বৃষ্টিপাত এবং আবহাওয়াজনিত কারণে কৃষকরা পর্যাপ্ত পরিমাণ খড় ঘরে তুলতে পারেননি। ফলে বাজারে খড়ের সরবরাহ কমে গিয়ে দাম বেড়ে গেছে কয়েকগুণ।বর্তমানে গোপালপুরে এক মণ ধান বিক্রি হচ্ছে ১,২০০ থেকে ১,৪০০ টাকায়, অথচ সেই ধানের খড় বিক্রি হচ্ছে ১,০০০ থেকে ১,২০০ টাকা মণে। এবং আঁটি হিসেবে বিক্রি হচ্ছে ১০/১২ টাকা করে কৃষকরা বলছেন, এমন অবস্থা আগে কখনো দেখা যায়নি।
 
ধোপাকান্দি ইউনিয়নের মুদিখানা এলাকাসহ বিভিন্ন স্থানে খড় বিক্রির ধুম পড়ে গেছে। খড় বিক্রেতা মো. রফিকুল ইসলাম জানান, তিনি কুড়িগ্রাম থেকে খড় এক ট্রাক ঘড় এনে প্রতিটি আটি ১১ থেকে ১২ টাকায় বিক্রি করছেন। “সামান্য কিছু লাভ থাকে, কিন্তু চাহিদা এত বেশি যে পাইকাররা আমার কাছ থেকে কিনে বিভিন্ন হাটবাজারে আরো বেশি মূল্যের বিক্রি করে বিক্রয় করছে।
 
স্থানীয় কৃষক আব্দুল জলিল বলেন, “আমরা ভেবেছিলাম ধান বিক্রি করে কিছু লাভ হবে, কিন্তু এখন দেখা যাচ্ছে খড়ই যেন সোনার খড়। গরুর খাদ্যের চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় সবাই খড় কিনতে হুমড়ি খেয়ে পড়ছে।গরু খামারি আব্দুল মালেক জানান, সাতটি গরু রয়েছে, কিন্তু বোরো মৌসুমে খড় সংগ্রহ করতে না পারায় এখন বাজার থেকে বেশি দামে খড় কিনে খাওয়াতে হচ্ছে। এতে গরু লালন-পালনে খরচ বেড়ে গেছে বহুগুণে।
 
স্থানীয় কৃষি কর্মকর্তারা জানান, গবাদি পশুর খাদ্যের ঘাটতি এবং খামারি সংখ্যা বৃদ্ধির কারণে খড়ের চাহিদা অস্বাভাবিকভাবে বেড়েছে। তারা কৃষকদের পরামর্শ দিয়েছেন খড় সংরক্ষণ ও বিক্রির মাধ্যমে অতিরিক্ত আয়ের সুযোগ কাজে লাগাতে।