গাজায় যুদ্ধবিরতি

ট্রাম্পের শান্তি পরিকল্পনার প্রথম ধাপে সম্মত ইসরায়েল-হামাস

আলোকিতপ্রজন্ম ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৩:১৫ পিএম, বৃহস্পতিবার, ৯ অক্টোবর ২০২৫ | ৯২
ছবি- রয়টার্স

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রস্তাবিত ২০ দফা শান্তি পরিকল্পনার প্রথম ধাপে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র সংগঠন হামাস এবং ইসরায়েল সম্মত হয়েছে। দুই বছর ধরে চলা গাজা যুদ্ধের অবসান এবং জিম্মি মুক্তির পথ প্রশস্ত করতে এই চুক্তিকে একটি ঐতিহাসিক পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে।

বুধবার মিশরের শহর শারম আল শেখে অনুষ্ঠিত পরোক্ষ আলোচনার পর এই ঘোষণা দেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। তার ২০ দফা শান্তি পরিকল্পনার প্রথম ধাপে যুদ্ধবিরতি কার্যকর করা, হামাসের হাতে থাকা সকল জীবিত ও মৃত জিম্মিকে মুক্তি দেয়া এবং গাজা থেকে ইসরায়েলি সেনা প্রত্যাহার করা হবে।

ট্রাম্প নিজের ট্রুথ সোশ্যাল বার্তায় বলেন, ‘উভয় পক্ষ আমাদের শান্তি পরিকল্পনার প্রথম ধাপে স্বাক্ষর করেছে। এর ফলে শিগগিরই সব জিম্মি মুক্তি পাবে এবং ইসরায়েল তাদের সেনা নির্দিষ্ট সীমারেখায় প্রত্যাহার করবে।’

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু চুক্তির বিষয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন এবং বৃহস্পতিবার (৯ অক্টোবর) মন্ত্রিসভার বৈঠকে এর অনুমোদনের জন্য আহ্বান জানাবেন বলে জানিয়েছেন। তিনি ট্রাম্পকে ইসরায়েলি পার্লামেন্ট 'নেসেটে' ভাষণ দেয়ার জন্য আমন্ত্রণও জানিয়েছেন। ট্রাম্প ঘোষণা দিয়েছেন, চুক্তি চূড়ান্ত হলে তিনি আগামী শনিবার বা রোববার এর আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দিতে মিশর সফরে যাবেন।

ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, ‘ঈশ্বরের কৃপায় আমরা আমাদের সব নাগরিককে ঘরে ফিরিয়ে আনব।’ হামাসও সমঝোতার বিষয়টি নিশ্চিত করে জানিয়েছে, এতে ইসরায়েলি সেনা প্রত্যাহার ও বন্দি-বিনিময়ের ধারা রয়েছে।

হামাস সূত্র জানায়, ইসরায়েলি মন্ত্রিসভার অনুমোদনের ৭২ ঘণ্টার মধ্যে জীবিত জিম্মিদের মুক্তি দেয়া হবে। ইসরায়েলি পক্ষ বলেছে, শনিবার থেকেই মুক্তির প্রক্রিয়া শুরু হতে পারে।

চুক্তিটি ট্রাম্পের ২০ দফা শান্তি পরিকল্পনার অংশ, যার লক্ষ্য গাজা যুদ্ধের অবসান ও স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠা। ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের হামলার পর শুরু হওয়া সংঘাতে গাজায় এখন পর্যন্ত প্রায় ৬৭ হাজার মানুষ নিহত হয়েছে।

আরব দেশগুলো বলেছে, ট্রাম্পের এই পরিকল্পনা কেবল তখনই সফল হবে, যদি তা ভবিষ্যতে একটি স্বাধীন ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র গঠনের পথ খুলে দেয়। তবে নেতানিয়াহু পুনরায় জানিয়েছেন, তিনি কখনও ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেবেন না।

জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস সকল পক্ষকে চুক্তি মেনে চলার আহ্বান জানিয়েছেন এবং বলেছেন, ‘গাজার মানবিক বিপর্যয় অবসান হোক।‘

মিশর, কাতার ও তুরস্কের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা এই আলোচনায় মধ্যস্থতা করেছেন। ট্রাম্প এই সফলতার জন্য মধ্যস্থতাকারীদের ধন্যবাদ জানিয়েছেন।