রাকসুতে কে হারবে-জিতবে, কাদের কী মতাদর্শ সেটি আমাদের দেখার বিষয় নয়: রাবি উপাচার্য

আলোকিতপ্রজন্ম ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৮:০১ পিএম, সোমবার, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫ | ১৯২

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকুস) নির্বাচনে কে হারবে-জিতবে, কাদের কী মতাদর্শ সেটি আমাদের দেখার বিষয় নয় বলে জানিয়েছেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. সালেহ হাসান নকীব। তিনি বলেন, আমরা শুধু চাই আমাদের শিক্ষার্থীরা যেন নির্ভয়ে তাদের ইচ্ছা-আকাঙ্ক্ষাগুলো প্রকাশ করতে পারে এবং ভোট দিতে পারে।’

সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) দুপুর ১২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজী নজরুল ইসলাম মিলনায়তনে ‘রাকসু কী এবং কেন’ শীর্ষক সেমিনারে রাবির উপাচার্য এসব কথা বলেন।

প্রার্থী ও তাদের টিমের প্রতি অনুরোধ জানিয়ে ড. সালেহ হাসান নকীব বলেন, ‘নির্বাচনের আচরণবিধিগুলো তোমরা অক্ষরে অক্ষরে পালন করবে। একটা জিনিস মনে রাখবে, জিততে গেলে হারতে শিখতে হয়। হেরে গেলে এটা-সেটা বলে পরিবেশ নষ্ট করাটা আমাদের একটি জাতীয় প্রবণতা। হারলেই খেলা ভালো হয়নি, এমন অ্যাটিটিউডের থেকে বাজে অ্যাটিটিউড দুনিয়াতে আর একটিও নেই। আমি আশা করছি আমাদের শিক্ষার্থীরা এমন অ্যাটিটিউড নিয়ে থাকবে না।’

তিনি বলেন, ‘অনেকে নানা ধরনের গুজব ছড়াচ্ছে যে, অমুকে এই কারসাজি করছে, তমুকে সেই কারসাজি করছে। আমরা প্রশাসনে ও নির্বাচন কমিশনে যারা আছি, তারা কারসাজির ক-ও বুঝি না। আমি এটি নিশ্চিত করে বলতে পারি যে, সারাজীবনে আমি কোনো কারসাজি করিনি, ভবিষ্যতেও কোনো কারসাজির সঙ্গে যুক্ত হওয়ার বিন্দুমাত্র ইচ্ছা নেই। কাজেই এ আস্থাটা আপনাদের রাখতে হবে।’

অধ্যাপক নকীব বলেন, ‘প্রায় ৩৫ বছর পর আমরা রাকসু নিয়ে কাজ করছি। সবার সহযোগিতায় আমরা আশা করছি একটি সুন্দর পরিবেশে আগামী ২৫ সেপ্টেম্বর রাকসু নির্বাচন সফলভাবে সম্পন্ন করতে পারব। আমরা যে পর্যায়ে এসেছি, এখানে আসাটা সহজ ছিল না; সবার দাবিদাওয়া, বাধা-প্রতিবন্ধকতা পেরিয়ে আমরা এই পর্যন্ত এসেছি। সবাই সহযোগিতা করলে বাকি পথটুকুও আমরা সঠিকভাবে পাড়ি দিতে পারব। আমরা আমাদের দায়িত্ব সম্পর্কে সচেতন আছি। আমাদের মূল দায়িত্ব হলো লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি করে দেয়া এবং ফ্রি অ্যান্ড ফেয়ার ইলেকশন অনুষ্ঠিত করা।’

সেমিনারে অধ্যাপক ড. পারভেজ আজহারুলের সঞ্চালনায় প্রধান আলোচক অধ্যাপক ড. আব্দুল হান্নান বলেন, ‘ডাকসু-জাকসু নির্বাচন হওয়ার পর রাকসু এখন সবার আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দু। রাকসু, হল সংসদ ও সিনেটে ছাত্র প্রতিনিধি নির্বাচন বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচন। ছাত্রদের দাবি-দাওয়াগুলো প্রশাসনের কাছে তুলে ধরা বা চাপ প্রয়োগ করে দাবি আদায় করার জন্য রাকসু নির্বাচন অপরিহার্য। এছাড়াও যারা সিনেট সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হবে তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাজেট, উপাচার্য নিয়োগসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ কাজে অংশগ্রহণ করবে। আশা করি সবাই মিলে আমরা একটি সুষ্ঠু নির্বাচন উপহার দিতে পারব।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. ফরিদ উদ্দীন খান বলেন, ‘আমাদের সব প্রস্তুতি শেষ, এখন শুধু অপেক্ষা করছি ২৫ তারিখের জন্য। বিস্ময়ের বিষয় হলো- এই ছাত্র সংসদ নির্বাচন দেশ-বিদেশে যে পরিমাণ সাড়া ফেলেছে, তা সত্যিই আশ্চর্যজনক। আমাদের বর্তমান প্রজন্ম অনেকদিন ধরে ভোট দেখেনি, সে কারণেই তাদের মধ্যে এতটা আমেজ কাজ করছে। নিষিদ্ধ পণ্যের মতোই পড়ে ছিল রাকসু। আমরা দীর্ঘদিন ধরে রাকসুকে সামনে আনতে পারিনি। এখন আমরা সুযোগ পেয়েছি, আর এ নির্বাচনকে ঘিরে সারা দেশের মানুষের মধ্যে এক ধরনের উৎসবমুখর আমেজ তৈরি হয়েছে।’

সেমিনারে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মাঈন উদ্দীন ও উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. ফরিদ উদ্দীন খান। প্রধান আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অধ্যাপক ড. মো. নিজাম উদ্দীন ও অধ্যাপক ড. মোস্তফা কামাল আকন্দ।

সুত্র:বণিক বার্তা