পিন্ডি ভেঙেছি দিল্লির দাসত্ব করার জন্য নয়....নাহিদ ইসলাম


জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহবায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, আমরা পিন্ডি ভেঙেছি দিল্লির দাসত্ব করার জন্য নয়। মওলানা ভাসানী পাকিস্তানের শাসকদের বিরুদ্ধে যেমন লড়েছেন, তেমনি দিল্লির আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধেও সোচ্চার ছিলেন।
আজ মঙ্গলবার দুপুরে টাঙ্গাইল শহরের নিরালা মোড়ে এনসিপি আয়োজিত ‘জুলাই পদযাত্রা’র সংক্ষিপ্ত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, এই টাঙ্গাইলের প্রতিইঞ্চি মাটি সংগ্রামের সাক্ষী। কৃষকের ঘামে গড়া এই টাঙ্গাইলেই মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানীর নেতৃত্বে বহু ঐতিহাসিক আন্দোলনের সূচনা হয়েছে। ভাসানী শুধু বাংলাদেশের নয়, উপমহাদেশের অনন্য এক রাজনৈতিক প্রবাদপুরুষ। আসামের বাঙালি মুসলমান কৃষকদের জমির অধিকার আদায়ে তার সংগ্রাম আজও প্রাসঙ্গিক। তিনি ছিলেন গণমানুষের নেতা, তৃণমূল রাজনীতির পথিকৃৎ। ভাসানীই প্রথম বুঝেছিলেন পাকিস্তানের সঙ্গে এক ছাদের নিচে বাঙালির টিকে থাকা অসম্ভব। কাগমারী সম্মেলনের মাধ্যমে তিনি পাকিস্তানি শাসকদের বিদায়ঘণ্টা বাজিয়েছিলেন।
ভাসানীর অবদান স্মরণ করে তিনি বলেন, তাকে ইতিহাসে যথাযথভাবে মূল্যায়ন করা হয়নি। শেরে বাংলা ফজলুল হক এবং মওলানা ভাসানীর মতো নেতাদের বাদ দিয়ে ইতিহাসের বিকৃতি করা হয়েছে। অথচ শেখ মুজিবুর রহমানও ভাসানীর রাজনৈতিক ধারার উত্তরসূরি। ১৯৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থানের অন্যতম নেপথ্য কারিগর ছিলেন মওলানা ভাসানী। আমরা তার আদর্শ বুকে ধারণ করে জাতীয় নাগরিক পার্টিকে দেশের সামনে একটি বিকল্প শক্তি হিসেবে দাঁড় করাতে চাই।
টাঙ্গাইল শাড়ি সম্পর্কে তিনি বলেন, টাঙ্গাইলের শাড়ির জিআই পণ্য নিয়েছে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ। ‘টাঙ্গাইল শাড়ি’ নামে কীভাবে ভারতের জিআই পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি দিতে পারে। টাঙ্গাইল শাড়ির জিআই স্বত্ব কখনোই ভারত নিতে পারে না। অবিলম্বে তা প্রত্যাহার করতে হবে। আমরা তাত শিল্পের পুনরুদ্ধার চাই।
সংক্ষিপ্ত এ পথসভায় উত্তরাঞ্চলের মূখ্য সংগঠক সারজিস আলম বলেন, আগামির বাংলাদেশে প্রশাসনকে একটা জিনিস স্পষ্ট করে বলতে চাই ’২৪ পরবর্তী বাংলাদেশের প্রশাসনকে, পুলিশসহ অন্যান্য বাহিনীকেও ‘বাংলাদেশের জন্য’ দেখতে চাই। বাংলাদেশের মানুষের জন্য দেখতে চাই। আমরা কোন দল, ব্যক্তি গোষ্ঠীর জন্য আর প্রশাসনকে ব্যবহৃত হতে দেখতে চাইনা। আগামির বাংলাদেশে কোন মিডিয়াকেও কোন ব্যক্তি-গোষ্ঠী বা দলের দালাল হিসেবে দেখতে চাইনা। এসময় তিনি দেশে কোন চাঁদাবাজিও দেখতে চাননা বলে জানান।
উত্তরাঞ্চলের সংগঠক আজাদ খান ভাসানীর সভাপতিত্বে সমাবেশে এনসিপির মুখ্য সমন্বয়কারী নাসির উদ্দিন পাটোয়ারীর সঞ্চালনায় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ, সিনিয়র যগ্ম-আহবায়ক সামান্তা শারমিন, সিনিয়র যুগ্ম-সদস্য সচিব ডা. তাসনিম জারা, সিনিয়র সদস্য সচিব সারোয়ার নিভা, ডা. তাজনুভা জাবিন সহ অন্যরা। এর আগে এনসিপির নেতারা জুলাই আন্দোলনে শহীদ ও আহত পরিবারের সদস্যদের সাথে মতবিনিময় করেন।