বাসাইলের সেই ইউএনওর জামিন


টাঙ্গাইলের বাসাইলের বহুল আলোচিত সাবেক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মনজুর হোসেনকে জামিন দিয়েছেন আদালত। সোমবার দুপুরে টাঙ্গাইল জেলা ও দায়রা জজ আদালতে আত্মসমর্পন করলে জেলা ও দায়রা জজ শেখ আব্দুল আহাদ চার্জ গঠন পর্যন্ত তাকে জামিন দেন।
বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে কলেজছাত্রীর সঙ্গে শারীরিক সম্পর্কের অভিযোগে তার বিরুদ্ধে এর আগে গত ২৩ জানুয়ারী গ্রেপ্তারি পরোয়ারা জারি করে আদালত।
মনজুর হোসেন রাজবাড়ীর পাংশা থানার চরঝিকড়ী গ্রামের বাসিন্দা। বর্তমানে তিনি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে ওএসডি হিসেবে সংযুক্ত আছেন।
টাঙ্গাইলের আদালত পরিদর্শক তানভীর আহমেদ জানান, সাবেক ইউএনও মনজুর হোসেন সকাল ১০টার দিকে জেলা ও দায়রা জজ আদালতে আদালতে উপস্থিত হন। দুপুর দুইটার দিকে আদালতে শুনানী হয়। মামলার চার্জ গঠন পর্যন্ত আদালত তাকে জামিন দেন।
টাঙ্গাইলের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) এস আকবর খান বলেন, ইতিপূর্বে বাদী ইউএনওর বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে মামলা করেছিলেন। তখন মামলাটি খারিজ হয়ে যায়। পরবর্তীতে তিনি বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে জোরপুর্বক ধর্ষণের অভিযোগ এনে মামলা করেন। আদালত মামলাটি পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) তদন্তের আদেশ দেন। পিবিআই মামলাটি তদন্ত করে প্রতিবেদন জমা দেয়। প্রতিবেদন পাওয়ার পর জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মামলাটি আমলে নিয়ে তাঁকে গ্রেপ্তারের আদেশ দেন। পরে ইউএনও উচ্চ আদালত থেকে চার সপ্তাহের জামিন নেন। সোমবার ছিল ওই জামিনের শেষ দিন। চার্জ গঠন পর্যন্ত আদালত তাঁকে জামিন দেন।
আদালত সূত্রে জানা যায়, মনজুর হোসেন বিগত ২০২১ সালে টাঙ্গাইলের বাসাইলে ইউএনও হিসেবে কর্মরত থাকার সময় ফেসবুকের মাধ্যমে মির্জাপুরের এক কলেজছাত্রীর সঙ্গে তাঁর পরিচয় হয়। পরে তাঁদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। একপর্যায়ে বিয়ের আশ্বাস দিয়ে মনজুর হোসেন বিভিন্ন সময় ওই কলেজছাত্রীর সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক করেন। তাঁকে নিয়ে ভারতে বেড়াতে যান। টাঙ্গাইল শহরে বাসা ভাড়া করে স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে তাঁরা একত্রে কয়েক মাস বসবাসও করেন। পরে ওই কলেজছাত্রী বিয়ের জন্য চাপ দিলে মনজুর হোসেন বিয়ে করতে অস্বীকার করেন ও তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করে দেন। এ ঘটনায় বিগত ২০২২ সালের ২১ জুন ওই কলেজছাত্রী আদালতে মামলা করেন। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে পিবিআইকে তদন্তের নির্দেশ দেন।
ওই কলেজছাত্রীর করা মামলাটি পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) তদন্তে প্রাথমিকভাবে অভিযোগ প্রমাণিত হয়। মামলাটি তদন্ত করে বিগত ২০২২ সালের ২৯ ডিসেম্বর পিবিআই আদালতে প্রতিবেদন জমা দেয়। তদন্তে আসামির বিরুদ্ধে দ-বিধি আইনের ৪৯৩ ধারার অপরাধ প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হওয়ায় গত ২৩ জানুয়ারি টাঙ্গাইল সদর উপজেলা আমলি আদালতের বিচারক অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মনিরা সুলতানা ইউএনওর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন।