আইনমন্ত্রী জানালেন

‘খালেদা জিয়ার মুক্তির মেয়াদ বাড়ানোর মতামত দেওয়া হয়েছে’

আলোকিতপ্রজন্ম ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৪:১৬ পিএম, রোববার, ১২ সেপ্টেম্বর ২০২১ | ৫০০

আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, এমপি বলেছেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তির মেয়াদ আরো ৬ মাস বাড়ানোর পক্ষে মত দেওয়া হয়েছে। এ সংক্রান্ত ফাইল এখন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে রয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদনের জন্য এখনও ফাইল পাঠানো হয়নি। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী দেশে ফিরলে তা প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদনের জন্য পাঠানো হবে। তিনি বলেন, খালেদা জিয়াকে বিদেশ যেতে হলে তাকে আবার জেলে যেয়ে নতুন করে আবেদন করতে হবে।

বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে আইন কমিশনের রজতজয়ন্তী উদযাপন ও আইন দর্পন স্বারক গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠান শেষে রবিবার দুপুরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে একথা বলেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, এমপি। তিনি বলেন, গত সপ্তাহে বিষয়টি আমাদের কাছে এসেছিল। আমরা মতামত দিয়ে পাঠিয়ে দিয়েছিলাম। তখন আমি বলে ছিলাম, প্রধানমন্ত্রী যতক্ষণ অনুমোদন না করছেন ততক্ষণ কিছুই বলতে পারবো না। কিন্তু গতকাল (শনিবার) একজন সাংবাদিক আমাকে জানিয়েছিলেন যে এটা প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে অনুমোদন হয়ে এসেছে। এ প্রেক্ষাপটে কি মতামত দিয়েছি, সেবিষয়ে আমি বলেছিলাম। কিন্তু আমি রাতে খোঁজ নিয়ে দেখেছি, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্র সচিব (সুরক্ষা বিভাগ) সরকারি কাজে বিদেশে আছেন। এ কারণে ওটা এখনও প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে পাঠানো হয়নি।

আইনমন্ত্রী বলেন, আমি খালেদা জিয়ার আবেদনের বিষয়ে এর আগে পরিষ্কারভাবে ব্যাখ্যা দিয়েছি। খালেদা জিয়ার আবেদনকে ফৌজদারি কার্যবিধির ৪০১ ধারার আবেদন হিসেবে গ্রহণ করা হয়েছে। এই আবেদনের ভিত্তিতে সরকার নির্বাহী আদেশে সাজা স্থগিত রেখে শর্তসাপেক্ষে খালেদা জিয়াকে মুক্তি দেয়। আমি এখনও বলছি, যে আবেদনের ওপর খালেদা জিয়ার মুক্তির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, সেই আবেদন নিষ্পত্তি করা হয়েছে। এ অবস্থায় এটা পরিবর্তন করার আইন নেই। যদি এটা করতে হয় তবে আমি আগেও বলেছি, এখনও বলছি, তাকে আবার জেলখানায় যেয়ে এটা বাতিল করতে হবে। এরপর তাকে নতুন করে আবেদন করতে হবে। এ নতুন আবেদন তারা করবেন কি না, সেটা তাদের ব্যাপার। তবে আইন মতো মেয়াদ বাড়ানো ছাড়া এখন আমাদের করার কিছুই নেই।

তিনি বলেন, এর আগেও দুইবার যে শর্তসাপেক্ষে মুক্তির বাড়ানো হয়েছিল। এবারও আমাদের মন্ত্রণালয় থেকে বলা হয়েছে, আরো ৬ মাস বাড়ানো হোক।

প্রাপ্ত তথ্যানুযায়ী, জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে কারাবন্দি ছিলেন খালেদা জিয়া। তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাকে বিএসএমএমইউতে ভর্তি করা হয়। সেখানেই তিনি চিকিৎসাধীন ছিলেন। তার শারীরিক অবস্থা বিবেচনায় নিয়ে পরিবারের সদস্যদের আবেদনে তার সাজা ছয়মাসের জন্য স্থগিত রেখে তাকে সাময়িক সময়ের জন্য মুক্তি দেয় সরকার।

ফৌজদারি কার্যবিধির ৪০১(১) ধারার ক্ষমতাবলে সরকার শর্তসাপেক্ষে এই মুক্তির আদেশ দেয়। এই আদেশে গতবছর ২৫ মার্চ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) হাসপাতালের প্রিজন সেল থেকে মুক্তি পান খালেদা জিয়া। এরপর খালেদা জিয়া রাজধানীর গুলশান এভিনিউয়ের নিজের বাসভবন ফিরোজায় যান। সেই থেকে তিনি সেখানেই আছেন। এরই মধ্যে তার মুক্তির মেয়াদ আরো বাড়ানো হয়েছে। আগামী ২৪ সেপ্টেম্বর মুক্তির মেয়াদ শেষ হচ্ছে। এ অবস্থায় খালেদা জিয়াকে বিদেশ নেওয়ার জন্য পরিবারের পক্ষ থেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তথা সরকারের কাছে নতুন করে আবেদন করা হয়। এরপর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে মতামতের জন্য আইন মন্ত্রণালয়ে ফাইল পাঠানো হয়। এ অবস্থায় আইন মন্ত্রণালয় মতামত দিয়ে এ সংক্রান্ত ফাইল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছে।