মধুপুর কমলবাইদ-ধামালিয়া সড়কতো নয় যেন মরণ ফাঁদ!


করোনায় টানা কয়েক মাস অটোরিক্সার চাকা ঘুরেনি। সরকারী-বেসরকারী ত্রাণ আর ধারকর্জে কোনভাবে দিন চলেছে। লকডাউন শিথিল হওয়ায় তার মতো চালকদের মনে স্বস্তি আসে। রাস্তায় চাকা ঘুরবে। ভাড়া মিলবে। জীবন সচল হবে। কিন্তু দশ গ্রামের মানুষ যে রাস্তায় বের হবে সেটির কাহিল দশা।
পাকাকরণের নামে খোড়াখুড়িতে সড়কে এখন হাঁটুজল। লালমাটির কাঁদা আটার মতো লেগে যায়। যানবাহন তো দূরের কথা পায়ে হেঁটেও চলা দূস্কর হয়ে পড়ে। তাই পুনরায় ভ্যান অচল অন্যদিকে রুটি রোজগার বন্ধ। এ যেন আারেক মরণ ফাঁদ।
মধুপুর উপজেলার বেড়িবাইদ ইউনিয়নের কমলবাইদ-ধামালিয়া রাস্তার এমন করুন বর্নণা দিচ্ছিলেন বেড়িবাইদ দক্ষিণ পাড়ার অটোচালক নির্মল বর্মন। মধুপুর উপজেলার পাহাড়ী এলাকার বেরিবাইদ ইউনিয়নের কমলবাইদ-ধামালিয়া সড়কের এমন বেহাল দশা দীর্ঘদিনের। গত কয়েক দিনের বৃষ্টিতে দূর্ভোগ বেড়ে মহা-দূর্ভোগের সৃষ্টি হয়েছে এ সড়কে চলাচলকারী যানবাহন, চালক, কৃষক ও কৃষিপণ্য পরিবহণকারীদের।
দূর্ভোগের শিকার হচ্ছে পাহাড়ী এলাকার লাখো মানুষ। এ সড়কের কাঁদা আর গর্ত দেখে অনেকেই এ সড়ককে মরণ ফাঁদ বলে মন্তব্য করেন। সরেজমিনে পাহাড়ী অঞ্চলের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, গুরুত্বপূর্ন এ সড়কের বেহাল দশা। দামালিয়া গ্রামের অটোচালক আমিনুল ইসলাম আমীন জানান, চার মাস আগে এলজিইডির ঠিকাদার সড়ক খুড়ে ফেলে রেখে যায়। বৃষ্টিতে কোথাও হাটু পানি আবার কোথাও কোমর পানি জমে। রিক্সাভ্যান পার করা যায় না। এখন আনারস, কলা ও কাঠাঁলের ভরা মৌসুম। ফল পরিবহন করে আয়রোজগারের মোক্ষম সুযোগ। কিন্তু বেহাল রাস্তায় কপাল বৈরী।
মাগন্তিনগর গ্রামের আনারস চাষী মজনু মিয়া জানান, ৩০ বিঘায় আনারস আর কলা আবাদ করেন। চার কিলো দূরের জলছত্র পাইকারী বাজারে ফল বাজারজাতকরণের রাস্তার বেহাল দশা থাকায় পরিবহন সমস্যায় অনেকের কলা বাগানে পঁচে নষ্ট হচ্ছে।
কমল বাইদের মশলা চাষী নজরুল ইসলাম জানান, আনারস, কলা, কাঁঠালের পাশাপাশি পেঁয়ারা, পেঁপে ও আদা হলুদের বাণিজ্যিক আবাদ হয় এ এলাকায়। পাইকারী বাজারে এসব পণ্য পরিবহনের একমাত্র রাস্তা এটি। তাই চাষীদের কপালে চিন্তার ভাঁজ।
স্থানীয় ইউপি মেম্বার হেলাল উদ্দীন জানান, ফলমূল ও সবজির ভরা মৌসুমে পাহাড়ী রাস্তাটির দুরবস্থা কৃষি জীবনকে অচল করে দিয়েছে।
বেড়িবাইদ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জুলহাস উদ্দীন জানান, পাহাড়ী দশ গ্রামের মানুষ এখন অবরুদ্ধ। বাগানের ফল পঁচে যাচ্ছে। অথচ ঠিকাদার কাজ করছে না। এ নিয়ে এলাকাবাসীর মধ্যে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে।
ঠিকাদার শহীদুর রহমান শাহীন জানান, খুব তাড়াতাড়ি নির্মাণ কাজ শুরু করা হবে।
মধুপুর উপজেলা প্রকৌশলী বিদ্যুৎ কুমার দাস ঘটনার সত্যতা স্বীকার কওে জানান, আড়াই কোটি টাকা ব্যয়ে সাড়ে তিন কিলো রাস্তা পাকাকরণের ঠিকাদার নানা ছুতায় কালক্ষেপন করায় মানুষের নিদারুন ভোগান্তি হচ্ছে।