টাঙ্গাইলের ঘাটাইলে পিতার পরকিয়ার বলি পুত্র, স্ত্রী গ্রেফতার

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৪:৩২ পিএম, বুধবার, ৮ জানুয়ারী ২০২০ | ৫৪৬

পুত্রবধূর সাথে শ্বশুরের পরকিয়ার কারণে নিজ পিতা ও স্ত্রীর পরিকল্পনায় নির্মমভাবে হত্যার শিকার হয়েছেন হাবিবুল্লাহ (২৫) নামের এক যুবক। ঘটনাটি ঘটেছে ঘাটাইল উপজেলার সংগ্রামপুর ইউনিয়নের মুলবাড়ি গ্রামে।

প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশ এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে হাবিুল্লাহর স্ত্রী ছবুরা বেগমকে (২৩) গ্রেপ্তার করে আদালতে প্রেরণ করেছে। গত রোববার (৫ জানুয়ারী) টাঙ্গাইল চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেটের আদালতে আসামীর ১৬৪ ধারায় জবানবন্দী প্রদান করা হয়েছে। আদালতের জবানবন্দিতে সে শ্বশুরের সাথে তার পরকিয়া সম্পর্ক থাকা এবং পরকিয়ায় বাধা দেয়ায় স্বামী খুন হওয়ায় কথা স্বীকার করে। পরে পুলিশ গত সোমবার (৬ জানুয়ারী) এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে নিহত হাবিবুল্লাহর পিতা আবু জাফর স্বপনকে (৫২) গ্রেপ্তার করে।

পুলিশ নিহত হাবিবুল্লাহর স্ত্রী ছবুরার দেয়া আদালতের জবানবন্দি সূত্রে জানা যায়, আবু জাফর স্বপনের বাড়ি ঘাটাইল উপজেলার সংগ্রামপুর ইউনিয়নের মুলবাড়ি গ্রামে। তার ছেলে হাবিবুল্লাহ (২৫) পেশায় একজন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী। সে আট মাস আগে কালিহাতী উপজেলার বেলটিয়া গ্রামের মকবুল হোসেনের মেয়ে ছবুরাকে বিয়ে করে। বিয়ের কিছু দিন পর থেকেই শ্বশুর আবু জাফরের সাথে পুত্রবধূ ছবুরার সাথে অনৈতিক সম্পর্ক গড়ে উঠে। পিতা আবু জাফর নানা কৌশলে নববিবাহিত ছেলে হাবিবুল্লাকে রাতে বাড়ির পাশের বাজারের দোকানে রাত্রিযাপনের জন্য পাঠিয়ে দিত। বিষয়টি হাবিবুল্লাহর সন্দেহ হয়।

এ অবস্থায় একদিন পিতার সাথে স্ত্রীর মেলামেশার দৃশ্য দেখে ফেলে। তারপর থেকেই বিষয়টি নিয়ে স্ত্রী ও পিতার সাথে তার মনোমালিন্য হয়। তারপরও শ্বশুর ও পুত্রবধূর অনৈতিক সম্পর্ক চলতেই থাকে। এতে ক্ষিপ্ত হয় ছেলে হাবিবুল্লাহ।

এ অবস্থায় পিতা আবু জাফর তার ছেলে হাবিবুল্লাহকে দুনিয়া থেকে সরিয়ে দেয়ার পরিকল্পনা নেয়। তার পরিকল্পনায় সায় দেয় পুত্রবধূ ছবুরা। তাদের পরিকল্পনা মোতাবেক গত (২৬ ডিসেম্বর) রাতে ভাড়াটে খুনিদের কাছে হাবিবুল্লাহকে তুলে দেয়। কিন্তু তাদের পরিচয় বলতে পারেনি ছবুরা। সেই রাত থেকেই নিখোঁজ হয় হাবিবুল্লাহ। নিখোঁজের চারদিন পর গত (৩০ ডিসেম্বর) বিকেলে ঘাটাইল উপজেলার সংগ্রামপুর ইউনিয়নের বগা গ্রামের আব্দুল লতিফের বাড়ির পাশে এক চোখ উপড়ে ফেলা হাবিবুল্লাহর লাশ পাওয়া যায়।

পুলিশ হাবিবুল্লাহর লাশ উদ্ধারের পর নিহতের বাবা অভিযুক্ত আবু জাফর স্বপন নিজেই বাদী হয়ে অজ্ঞাত ব্যাক্তিদের আসামী করে ওইদিনই ঘাটাইল থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন (মামলা নং-০৮)।

ঘাটাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাকসুদুল আলম জানান, শ্বশুর ও পুত্রবধূর পরকিয়ার সূত্র ধরেই হাবিবুল্লাহ খুনের ঘটনা ঘটেছে। হাবিবুল্লাহর স্ত্রী ছবুরা এ ব্যাপারে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন। শ্বশুর আবু জাফরকে আটক করা হয়েছে। আশা করছি দ্রুততম সময়ের মধ্যে হত্যার সাথে জড়িত অন্যানদের আইনের আওতায় আনা সম্ভব হবে।