এলেঙ্গা-জামালপুর মহাসড়ক
মন্থরগতির কাজে দুর্ভোগ বেড়েছে


ধীরগতিতে চলছে টাঙ্গাইলের এলেঙ্গা থেকে জামালপুর পর্যন্ত আঞ্চলিক মহাসড়ক প্রশস্তকরণের কাজ।
খোঁড়াখুড়ির কারণে বৃষ্টিতে কাদা আর খানা-খন্দের সৃষ্টি হয়েছে। ফলে মহাসড়কের প্রায় পুরো অংশেই পিচ ঢালাই ওঠে গিয়ে এখন ছোট বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। যার কারণে মহাসড়কে চলাচলকারী যাত্রীবাহী বাস ও মালবাহী গাড়ী প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে। এতে করে বাড়ছে প্রাণহানি। প্রতিনিয়ত ভোগান্তির মধ্যে পড়ছে পণ্যবাহী যানবাহন ও সাধারন যাত্রীরা।
সড়ক ও জনপথ বিভাগ সূত্রে জানা যায়, গত ২০১৮ সালের ৩ এপ্রিল একনেকের ২১তম সভায় অনুমোদিত হয় এলেঙ্গা-জামালপুর ন্যাশনাল হাইওয়ে প্রশস্তকরন প্রকল্প। ৭৭ দশমিক ৬০ কিলোমিটার মহাসড়কটির প্রকল্প ব্যায় ধরা হয়েছে ৪৮৯ দশমিক ৮২ কোটি টাকা। পাঁচটি প্যাকেজে ২০২০ সালের জুন নাগাদ মহাসড়কের উন্নয়ন কাজ শেষ হওয়ার কথা।কিন্তু কাজের ধীরগতিতে তা অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। এ কাজের এক থেকে তিন নম্বর প্যাকেজে ওয়াহিদ কনস্ট্রাকশন আর চার ও পাঁচ নম্বর প্যাকেজে জামিল অ্যান্ড কোম্পানি নামে দুটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান কাজ পায়।
এ মহাসড়কটির উন্নয়ন কাজ শুরু হয় চলতি বছরের মার্চ মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে। শুরুতেই প্রশস্তকরণের জন্য সড়কের দুই পাশে মাটি খুড়ে গর্ত করা হয় এবং ঘাটাইল সদরের অংশে সড়কের এক পাশে যানবাহন চালু রেখে সড়কের অপর পাশে পেভমেন্ট ঢালাইয়ের কাজ শুরু করা হয়। দুটো কাজই ধীরগতিতে চলার কারনে যানবাহনের অতিরিক্ত চাপে পৌর শহরের অংশে খানাখন্দের সৃষ্টি হয়েছে।
খানাখন্দের কারনে সামান্য বৃষ্টিতে সড়কে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়ে পানি জমে যাচ্ছে । গর্তে আটকে পড়ে অনেক যানবাহন বিকল হয়ে যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। প্রশস্তকরণের জন্য সড়কের দুই পাশে মাটি খুড়ে গর্ত করার কারনে যানবাহনগুলি স্বাভাবিক চলাচল করতে পারছে না । অরক্ষিত খাদে পড়ে প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা। গত ১ অক্টোবর ঘাটাইল ও মধুপুর উপজেলার সীমান্তবর্তী বেকারকোনা নামকস্থানে কালভার্ট নির্মাণের জন্য মাটি খনন করা অরক্ষিত খাদে একটি যাত্রীবাহী বাস পড়ে গিয়ে ৩০ জন যাত্রী আহত হয়।
২৪ অক্টোবর কালিহাতী সদরে বাস খাদে পড়ে ১৫ জন আহত হয়। খানাখন্দের কারনে ১৩ আগষ্ট ঘাটাইল উপজেলা সদরের বানিয়াপাড়া নামক স্থানে একটি যাত্রীবাহী বাস উল্টে গিয়ে ১ জন নিহত হয় আহত হয় ২০ যাত্রী। এ ছাড়া খানাখন্দের কারনে সিএনজি, ব্যাটারি চালিত ইজিবাইক, মোটরসাইকেল, ব্যাটারিচালিত ভ্যান ও রিক্সা প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে। এ অবস্থায় সড়কটি এখন সাধারন মানুষের জন্য মরণফাঁদে পরিনত হয়েছে। উপজেলা সদরের পেভমেন্ট ঢালাইয়ের যে কাজ করা হয়েছে তা নিয়মমাফিক করা হয়নি বলে অভিযোগ সাধারন জনগনের।
জিবিজি সরকারি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ শামছুল আলম মনি বলেন, গত একমাস যাবৎ ঠিাকাদারী প্রতিষ্ঠানের কোন লোকজনকেও দেখছি না কাজও বন্ধ রয়েছে। সড়কের এক একটি গর্ত মৃত্যুফাঁদে পরিনত হয়েছে। এতে প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটছে।
এ সড়কে চলাচলকারী একাধিক যাত্রীবাহী বাসচালক জানান, একেতো ভাঙ্গাচোরা সড়ক গাড়ী চালানো অনেকটাই ঝুকি। তার মধ্যে ব্যাটারি চালিত অটো- সিএনজির কারণে সহসাই দুর্ঘটনায় পড়তে হচ্ছে।
জানতে চাইলে সওজের নির্বাহী প্রকৌশলী আমিমুল এহসান বলেন, ২/৩ মাস কাজ বন্ধ ছিল। তারা বিভিন্ন জায়গা থেকে পাথর ভিটুমিন কিনে নিয়ে এসছে। গত পরশু থেকে কাজ ধরলেও বৃষ্টির কারণে বন্ধ রয়েছে। কাজ শুরু হয়ে যাবে। দুর্ভোগ অনেকটাই কমে যাবে।
ওয়াহিদ কনস্ট্রাকশনের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রজেক্ট ম্যানেজার হাফিজুর রহমান বলেন, নির্মাণ সামগ্রির অপ্রতুলতাসহ নানা কারনে মাঝখানে কাজের কিছুটা ধীরগতি ছিল। মঙ্গলবার থেকে আবার কাজ শুরু করা হয়েছে।