গাজায় নতুন শান্তি পরিকল্পনায় ট্রাম্প-নেতানিয়াহুর ঐকমত্য; হামাসকে সতর্কবার্তা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৩:৩৫ পিএম, মঙ্গলবার, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৫ | ১০৭

গাজা সংকট সমাধানে নতুন শান্তি পরিকল্পনা ঘোষণা করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। তারা বলেছেন, এ প্রস্তাব গ্রহণ না করলে হামাসকে কঠোর পরিণতি ভোগ করতে হবে। খবর বিবিসি।

পরিকল্পনা অনুযায়ী, তাৎক্ষণিকভাবে সামরিক অভিযান বন্ধ হবে। ৭২ ঘণ্টার মধ্যে হামাসকে জীবিত ২০ ইসরায়েলি জিম্মি এবং মৃত বলে ধারণা করা আরও দুই ডজনের বেশি জিম্মির মরদেহ মুক্তি দিতে হবে। এর বিনিময়ে ইসরায়েল শত শত আটক ফিলিস্তিনিকে মুক্তি দেবে।

বিবিসিকে দেয়া তথ্য অনুযায়ী, হামাসকে হোয়াইট হাউসের ২০ দফা প্রস্তাব হস্তান্তর করেছে কাতার ও মিসরের কর্মকর্তারা। এতে শর্ত রাখা হয়েছে—হামাস গাজার শাসনে কোনোভাবেই অংশ নিতে পারবে না। পাশাপাশি ভবিষ্যতে একটি স্বাধীন ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রের পথও উন্মুক্ত রাখা হয়েছে।

হোয়াইট হাউসে সংবাদ সম্মেলনে ট্রাম্প একে 'শান্তির ঐতিহাসিক দিন' আখ্যা দিয়ে বলেন, হামাস প্রস্তাব না মানলে ইসরায়েলকে সমর্থন দিয়ে 'হামাসের হুমকি ধ্বংস' করার কাজও শেষ করা হবে। নেতানিয়াহুও সতর্ক করে বলেন, 'হামাস প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করলে আমরা কাজ শেষ করব।'

ট্রাম্পের পরিকল্পনা অনুযায়ী, যুদ্ধবিরতি কার্যকর হলে বিদ্যমান ফ্রন্টলাইন স্থগিত থাকবে এবং ধাপে ধাপে সেনা প্রত্যাহার হবে। হামাসকে অস্ত্র জমা দিতে হবে এবং টানেল ও অস্ত্র উৎপাদন কেন্দ্র ধ্বংস করা হবে। প্রতিটি ইসরায়েলি জিম্মির মরদেহের বিনিময়ে ১৫ জন ফিলিস্তিনির মরদেহ ফেরত দেয়া হবে। উভয়পক্ষ সম্মত হলেই গাজায় পূর্ণমাত্রার ত্রাণ সহায়তা প্রবেশ করবে।

এই পরিকল্পনায় গাজার ভবিষ্যত শাসনের জন্য একটি রূপরেখা দেয়া হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, একটি 'টেকনোক্রেটিক, অরাজনৈতিক ফিলিস্তিনি কমিটি' অস্থায়ীভাবে গাজা শাসন করবে। এ কমিটি পর্যবেক্ষণ করবে একটি আন্তর্জাতিক সংস্থা 'বোর্ড অব পিস', যার নেতৃত্ব দেবেন ট্রাম্প নিজেই। এ বোর্ডে যুক্ত হবেন সাবেক ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী টনি ব্লেয়ারও। তিনি এ পরিকল্পনাকে 'সাহসী ও বুদ্ধিদীপ্ত' বলেছেন।

ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার, ইউরোপীয় কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট আন্তোনিও কস্তা এবং ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাখোঁ এ প্রস্তাবকে স্বাগত জানিয়েছেন। মাখোঁ বলেছেন, এই পরিকল্পনা দীর্ঘস্থায়ী শান্তির পথে দুই রাষ্ট্রভিত্তিক সমাধানের জন্য আলাপ-আলোচনার পথ খুলে দিতে পারে।

অন্যদিকে, ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ এ প্রচেষ্টাকে 'আন্তরিক ও দৃঢ়' বলে অভিহিত করে যুক্তরাষ্ট্রসহ আঞ্চলিক দেশগুলোর সঙ্গে কাজ করার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছে।

তবে হামাসের এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বিবিসিকে বলেছেন, তারা প্রস্তাব পর্যালোচনা করতে প্রস্তুত থাকলেও চূড়ান্ত সমাধানে ফিলিস্তিনি স্বার্থ, পূর্ণ ইসরায়েলি সেনা প্রত্যাহার এবং যুদ্ধের অবসান নিশ্চিত হতে হবে। তিনি আরও বলেন, 'দখল চলমান থাকলে প্রতিরোধের অস্ত্র নিয়ে কোনো সমঝোতা সম্ভব নয়।'